আজ রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিশ্বাস নেই

বিষাদসিন্দু:

কথায় আছে, পরের জন্য কুয়া খুঁড়লে সেই কুয়োয় নিজের পড়তে হয়। আর তেমনটিই এবার বাস্তবে দেখা দিয়েছে নারায়ণ গঞ্জের রাজনীতিতে। মেয়র আইভীকে ভোটে হারাতে না পেরে বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলেছে কয়েক মাসজুড়ে। কিন্তু হয়েছে হিতে বিপরীত। একের পর এক মেয়র বিরোধী ইস্যু সামনে এলেও প্রতিটিই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বিশ্বাসের দিক থেকে। আর তাই যারা এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন তারাই প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন সাধারণ মানুষের কাছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে জিউস পুকুর নিয়ে প্রথম মেয়র বিরোধী অবস্থান শুরু করে হিন্দু নেতা ও ওসমান পন্থী আওয়ামী নেতারা। টানা ৩টি সভা সমাবেশ করেও সাধারণ হিন্দুদের মন ভোলাতে পারেননি। কারন পুরো বিষয়টি আদালতে মীমাংসার জন্য অপেক্ষমান। কিন্তু মেয়র বিরোধীরা আদালত ছাড়াই ফয়সালা করে দিতে মরিয়া। আর পুরো বিষয়টি আগেই বুঝে নিয়েছিলেন সাধারণ ভোটার সহ সাধারণ হিন্দুরা। তাই ব্যাপক অর্থ খরচ করে কেবল মেয়রের বিরুদ্ধেই বক্তব্য দেয়া গেছে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন হয়নি।

এরপরে সামনে আসে নারায়ণগঞ্জের ওলামা পরিষদের মেয়র বিরোধী অবস্থান। মাওলানা আব্দুল আউয়াল ও মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান মিলে শুরু করেন মসজিদ মাদ্রাসা ইস্যুতে মেয়র বিরোধী প্রচারণা। মসজিদের মিম্বরকে রাজনৈতিক মঞ্চ বানিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য প্রদান করেছেন মাওলানা আব্দুল আউয়াল। কিন্তু গুজবকে সত্য প্রমাণ করতে পারেননি। উল্টো শোনা কথা প্রচার করে নিজেই বিতর্কিত হয়েছেন একজন আলেম হিসেবে। একই অবস্থা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের। বাগে জান্নাত মসজিদ ও মাসদাইর কবরস্থান মসজিদ নিয়ে যেই জলঘোলা করতে চেয়েছেন তাতে সফলতা পাননি। উল্টো অপমানিত হয়েছেন মিথ্যাকে সত্য প্রমাণ করতে গিয়ে।

বাগে জান্নাত মসজিদের সামনে সমাবেশ ডেকে ওলামা নেতারা সাধারণ মানুষের সাড়া পাননি। সংবাদ সম্মেলনে এসে কোনমতে পালিয়ে বেঁচেছেন। তাদের কাছে মালিকানার দলিল আছে এমন দাবী করলেও তা প্রদর্শন করেননি। পরবর্তীতে মসজিদ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা খোদ ওলামা নেতাদের দাবীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে বন্ধ হয় তাদের মুখ। ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করা নেতাদের এমন পরিণতি আগে দেখেনি নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ।

সবশেষ মন্ডলপাড়া জামে মসজিদ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে উল্টো বিতর্কে জড়িয়েছে মসজিদ কমিটির লোকেরা। লোকমুখে শোনা কথাকে অভিযোগ হিসেবে উত্থাপিত করে বিতর্কিত করতে চেয়েছেন মেয়রকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাদেরও। উল্টো তাদের পরিচয় ও উদ্দেশ্যে জেনে সাধারণ মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে সকল অভিযোগ। একই সাথে রাইফেলস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করায় স্পষ্ট হয়েছে পেছনে কলকাঠি কে নাড়াচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেয়রের বিরুদ্ধে সভা সমাবেশ করে মেয়রকে বিতর্কিত করার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ইতিপূর্বেও এমন কাজ করে তার জনপ্রিয়তা কমানোর চেষ্টা হয়েছে বহুবার। কিন্তু পেছনে কলকাঠি কারা নাড়ায় তা বারবারই স্পষ্ট হয়ে যায় গোঁজামিল পূর্ন অভিযোগের কারনে। আর সেই কারনেই নিজেদের পাতা ফাঁদে নিজেরাই আটকে গেছেন ভালোমত। মেয়রের জনপ্রিয়তা কমাতে যাদের এত তোরজোড় উল্টো তারাই কমিয়েছেন নিজেদের জনপ্রিয়তা।